আজ
|| ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ২৬শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
মৃত্যুর আগের আছিয়া ও তার ভাইয়ের সাক্ষাৎকারের ভিডিওটি ভুয়া
প্রকাশের তারিখঃ ১৪ মার্চ, ২০২৫
মৃত্যুর আগের মাগুরার সেই শিশু আছিয়ার সাথে তার ভাইয়ের সাক্ষাৎকার’ দাবি করে সামাজিক যোগোযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকেই সেই ভিডিও ফেসবুকে শেয়ারও করেছেন। কিন্তু এক ফ্যাক্ট চেকে দেখা গেছে, ভিডিওটি আছিয়ার নয়। এটি ভারতের একটি ভিডিও। যা চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি ইউটিউবে আপলোড করা হয়েছিল।
আদনান মিডিয়া নামের এক আইডিতে ওই ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, ‘মাগুরার আছিয়া আমাদের মাঝে নেই, মৃত্যুর আগে ভাইয়ের সাথে সাক্ষাৎ।’ আজ বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে আছিয়ার মৃত্যুর পর ভিডিওটি এরকম আরও অনেকেই শেয়ার করেছেন।
এদিকে এএফপির ঢাকাস্থ সাংবাদিক ও ফ্যাক্ট চেকার মো. ইয়ামিন তার ফেসবুক আইডিতে এই ঘটনার একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তিনি দুইটা ভিডিওর স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন। সেখানে তিনি এই ভিডিওটি আছিয়া নয় দাবি করে লিখেছেন, ‘এটি ভাইয়ের সাথে আছিয়ার শেষ মূর্হুতের ভিডিও নয়। এই নষ্ট সমাজ ছেড়ে নিষ্পাপ নির্যাতিত আছিয়া বিদায় নিয়েছে। হায়নারা শিশুটিকে বাঁচতে দিলো না। কিন্তু আপনারা যারা নিচের এই ভিডিওটিকে ভাইয়ের সাথে আছিয়ার শেষ মূর্হুত বলে ছড়াচ্ছেন তারা আসলে মায়া কান্না করছেন। এই ভিডিওটির সাথে আছিয়ার কোন সম্পর্ক নেই।’
তিনি দাবি করেছেন, ভিডিওটি ভারতের কেরালার অন্য এক চিকিৎসাধীন বাচ্চার। আছিয়া মারা গেছে আজ। আর এই ভিডিওটি ইউটিউবে আপলোড হয়েছিল ২০২৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারিতে । অর্থাৎ তখনও আছিয়া সুস্থ্য সুন্দর ছিল, হায়নাদের আক্রমনের শিকার হয়নি। যারা ভিডিওটি ছড়াচ্ছেন তারা অসত্য তথ্য ছড়াচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় আট বছর বয়সী শিশুটি।
হাসপাতালের শিশু বিভাগের শিশুরোগের চিকিৎসাসংক্রান্ত নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (পিআইসিইউ) চিকিৎসা চলছিল তার। গতকাল বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারবার ও বৃহস্পতিবার আরও দু‘বার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ (আকস্মিকভাবে হৃৎস্পন্দন বন্ধ) হয় শিশুটির।
আট বছরের শিশুটি গত ৫ মার্চ মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে গভীর রাতে ধর্ষণের শিকার হয়। শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। পরে বৃহস্পতিবার রাতে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। অবস্থার আরও অবনতি হলে শনিবার (৮ মার্চ) বিকেলে শিশুটিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছিল।
ধর্ষণের ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে চারজনের নামে মামলা করেন। ধর্ষণের অভিযোগে শিশুটির ভগ্নিপতি সজিব (১৮), সজীবের ভাই রাতুল (১৭), তাদের বাবা হিটু মিয়া (৪২) ও মা জাবেদা বেগমকে (৪০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
Copyright © 2025 আজকের মেইল. All rights reserved.