আজ
|| ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ২৬শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
পাঁচ ব্যাংকে জমা টাকাই এখন দুঃস্বপ্ন, গ্রাহকরা ফিরছেন খালি হাতে
প্রকাশের তারিখঃ ৩০ আগস্ট, ২০২৫
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ব্যাংক ও আর্থিক খাতে ব্যাপক লুটপাটের খেসারত এখন দিতে হচ্ছে সাধারণ গ্রাহকদের। বহু ব্যাংকে জমা রাখা গচ্ছিত অর্থ তুলতে পারছেন না সাধারণ গ্রাহকরা। পাঁচটি বেসরকারি ব্যাংক কার্যত নামেমাত্র টিকে আছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দীর্ঘদিনের অনিয়ম, লুটপাট, দুর্বল ব্যবস্থাপনা এবং সরকারের উদাসীনতার ফলেই এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। একসময় বাংলাদেশ ব্যাংক দুর্বল ব্যাংকগুলোকে টিকিয়ে রাখতে আর্থিক সহায়তা দিলেও এখন সেই সহায়তা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এক্সিম ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের মতো একাধিক ব্যাংক কার্যত দেউলিয়া অবস্থায় পৌঁছেছে।
এই ব্যাংকগুলোর গ্রাহকরা এখন চরম দুর্ভোগে। কেউ কয়েক হাজার টাকার বেশি তুলতে পারছেন না, আবার অনেকে কোনো টাকা তুলতেই পারছেন না। রাজধানীর মতিঝিল, হাটখোলা, বনানী ও মিরপুরের বিভিন্ন শাখায় প্রতিদিনই গ্রাহকদের দীর্ঘ লাইন দেখা যাচ্ছে। কিন্তু টাকা না পেয়ে তারা ক্ষোভ, হতাশা আর কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।
মতিঝিলের গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের একজন গ্রাহক আবেগে ভেঙে পড়ে বলেন, ছেলের স্কুল ফি দিতে এসেছিলাম, কিন্তু টাকা পেলাম না। ব্যাংকের লোকজন শুধু কাল-পরশুর আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে ইউনিয়ন ব্যাংকের হাটখোলা শাখায় দেখা গেছে, গ্রাহকদের ভিড় থাকলেও কর্মকর্তারা অসহায়ভাবে জানাচ্ছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সহায়তা বন্ধ করায় এক মাসের বেশি সময় ধরে তারা কোনো অর্থ ফেরত দিতে পারছেন না। অনেক কর্মকর্তা এমনকি নিজেদের বেতনও পাচ্ছেন না।
অর্থনীতিবিদ ও ব্যাংক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ব্যাংক খাতের এই সংকট একদিনে তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর রাজনৈতিক প্রভাব, খেলাপি ঋণ, কাগুজে ব্যবসায়ীকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া, আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রণহীনতা এবং বড় ধরনের দুর্নীতির কারণে এখন এই দশা।
বাংলাদেশ ব্যাংক অবশ্য বলছে, দুর্বল ব্যাংকগুলোকে ধাপে ধাপে মার্জার ও সংস্কারের আওতায় আনা হবে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগবে। কিন্তু তাতে সাধারণ গ্রাহকের দুর্ভোগ কমছে না। প্রতিদিন তারা ব্যাংকে গিয়ে আশাহত হয়ে ফিরছেন, জরুরি প্রয়োজনে টাকা তুলতে না পেরে অনেকেই ধারদেনায় ডুবে যাচ্ছেন।
রিপোর্ট :দৈনিক যুগান্তর
Copyright © 2025 আজকের মেইল. All rights reserved.