রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৫৬ অপরাহ্ন

ম্যানেজিং কমিটি থেকে বাদ রাজনৈতিক নেতারা, প্রজ্ঞাপন জারির সময় জানাল মন্ত্রণালয়

Reporter Name / ৮২ Time View
Update : রবিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৫

স্কুল-কলেজের ম্যানেজিং কমিটি থেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বাদ দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ পদে সরকারি কর্মকর্তা কিংবা অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিধান যুক্ত করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে বলে জানা গেছে।

রবিবার (৩১ আগস্ট) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের শীর্ষ এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘ম্যানেজিং কমিটিতে রাজনৈতিক নেতা কিংবা ব্যক্তিদের থাকার সুযোগ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাদের অযাচিত হস্তক্ষেপের কারণে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। চলতি সপ্তাহে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।’

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৮টি প্রস্তাব দ্রুত বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। এগুলোর মধ্যে সহজে বাস্তবায়নযোগ্য আটটি প্রস্তাবের কথা বলা হয়েছে। এরমধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি গঠন সংক্রান্ত নীতিমালাটি সহজে ও দ্রুত বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছে সংস্কার কমিশন। পাশাপাশি ম্যানেজিং কমিটি গঠন সংক্রান্ত নীতিমালাটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগকে বলা হয়েছে।

সম্প্রতি ম্যানেজিং কমিটি গঠন সংক্রান্ত প্রস্তাব পাঠিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘রাজনৈতিক ব্যক্তিরা ম্যানেজিং কমিটিতে সংশ্লিষ্ট থাকায় নানা রকম সমস্যার সৃষ্টি হয়। তাই ম্যানেজিং কমিটিতে রাজনৈতিক ব্যক্তির পরিবর্তে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে বেসরকারি কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি গঠনের জন্য জোরালো সুপারিশ করেছে কমিশন।’

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ম্যানেজিং কমিটি গঠন সংক্রান্ত সংশোধিত নীতিমালা সচিব কমিটিতে অনুমোদন হয়েছে। চলতি সপ্তাহে নীতিমালা সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে।

জানা গেছে, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জন-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে প্রধান ছয়টি কমিশনসহ বিভিন্ন বিষয়ে যেসব সংস্কার কমিশন গঠন করে, সেসব কমিশন সরকারের কাছে সংস্কার প্রস্তাব দাখিল করেছে। এই প্রস্তাবগুলোর মধ্যে সংবিধান সংশ্লিষ্ট ও বড় সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্যের জন্য প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কাজ করছে। তবে, যেসব সংস্কার প্রস্তাব প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় নিজ উদ্যোগেই বাস্তবায়ন করতে পারে, সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশনা দিয়েছেন।

পাঁচটি সংস্কার কমিশনের আশু বাস্তবায়নযোগ্য মোট ১২১টি প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে বাস্তবায়ন কার্যক্রম গ্রহণের জন্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের ৯টি, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের ৩৮টি, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের ৪৩টি, পুলিশ সংস্কার কমিশনের ১৩টি এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৮টি সংস্কার প্রস্তাব আশু বাস্তবায়নযোগ্য হিসেবে বাছাই করা হয়েছে।

এই ১৮টি প্রস্তাবের মধ্যে আটটি অপেক্ষাকৃত সহজে বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাব নিয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এগুলো হলো: (১) মহাসড়কের পেট্রোলপাম্পগুলোতে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট সংক্রান্ত, (২) মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটকে ডায়নামিক করা, (৩) কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন, (৪) কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিচালনা, (৫) গণশুনানি, (৬) তথ্য অধিকার আইন, (৭) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো পুনর্গঠন এবং (৮) ডিজিটাল রূপান্তর এবং ই-সেবা।

এর মধ্যে ৩ নম্বর পয়েন্টে বলা হয়েছে, সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন: ১. মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ ম্যানেজিং কমিটি গঠন সংক্রান্ত নীতিমালা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করবে; জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ভেটিং সম্পন্ন করে তা ফেরত পাঠাবে এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ তা জারি করবে; নীতিমালা জারির এক মাসের মধ্যে কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি পুনর্গঠনের কাজ সম্পন্ন করতে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :
More News Of This Category

ফেসবুকে আমরা