রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৪১ পূর্বাহ্ন

পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকে প্রশাসক বসছে বুধবার

Reporter Name / ৩৩ Time View
Update : সোমবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৫

সমস্যাগ্রস্ত পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক একীভূত করে একটি বৃহৎ ইসলামী ব্যাংক গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ লক্ষ্যে আগামী বুধবার এসব ব্যাংকে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হবে। প্রশাসক নিয়োগের আগে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ স্থগিত করা হবে। একই সঙ্গে ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) চুক্তিও বাতিল করা হবে। সরকার ইতোমধ্যে ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণের প্রস্তাবে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

একীভূত হতে যাওয়া ব্যাংক পাঁচটি হলো—এক্সিম, সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, ইউনিয়ন ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। এর মধ্যে এক্সিম ব্যাংকে প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পাচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শওকাতুল আলম। সোশ্যাল ইসলামীতে নির্বাহী পরিচালক সালাহ উদ্দিন এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে দায়িত্ব পাচ্ছেন আরেক নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ বদিউজ্জামান দিদার। গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে পরিচালক মো. মোকসুদুজ্জামান এবং ইউনিয়ন ব্যাংকের দায়িত্ব পাচ্ছেন পরিচালক মোহাম্মদ আবুল হাসেম।

এই প্রশাসকদের প্রথম কাজ হবে পাঁচ ব্যাংক একীভূতকরণে সব ধরনের তথ্য সরবরাহ। সেনা কল্যাণ ভবনে এসব ব্যাংক একীভূতকরণের জন্য স্থাপিত কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা সব তথ্য সমন্বয় করবেন। নতুন ব্যাংকটির নাম চূড়ান্ত হয়েছে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’।

বাংলাদেশ ব্যাংক এক বছর ধরে এই পাঁচ ব্যাংককে একীভূত করতে কাজ করছে। এ নিয়ে আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন, সংকটে পড়া ব্যাংকগুলোর সম্পদ ও দায় পর্যালোচনা, ব্যাংক পাঁচটিকে কারণ দর্শানোর নোটিস প্রদান এবং সময় দেওয়ার পাশাপাশি আরো বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়।

গত ৯ অক্টোবর পাঁচ ব্যাংক একীভূত করার প্রস্তাব অনুমোদন করে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এতে সিদ্ধান্ত হয়, নতুন ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন হবে ৪০ হাজার কোটি টাকা, যার মধ্যে পরিশোধিত মূলধন ৩৫ হাজার কোটি। পরিশোধিত মূলধনের ২০ হাজার কোটি টাকা দেবে সরকার, যার ১০ হাজার কোটি টাকা নগদে এবং বাকি ১০ হাজার কোটি সুকুক বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে পরিশোধ করা হবে। ফলে শুরুতে এটি হবে সরকারি খাতের একটি ব্যাংক।

এছাড়া শেয়ার রূপান্তরের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীদের ১৫ হাজার কোটি টাকা মূলধনে রূপান্তর করা হবে। এ প্রক্রিয়ায় ব্যাংকের গ্রাহক ও অন্যান্য পাওনাদারের ঋণের একাংশ শেয়ারে রূপান্তর হবে। পরে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় এই শেয়ারের অর্থ নগদায়ন করা হবে।

অক্টোবরে রেমিট্যান্স এসেছে ২৫৬ কোটি ডলারঅক্টোবরে রেমিট্যান্স এসেছে ২৫৬ কোটি ডলার
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, একীভূত হতে যাওয়া পাঁচ ব্যাংকে ৭৫ লাখ আমানতকারীর বর্তমানে জমা আছে এক লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা। এর বিপরীতে ঋণ রয়েছে এক লাখ ৯৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এক লাখ ৪৭ হাজার কোটি টাকা বা ৭৬ শতাংশ এখন খেলাপি। সারা দেশে এসব ব্যাংকের ৭৬০টি শাখা, ৬৯৮টি উপশাখা, ৫১১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং ৯৭৫টি এটিএম বুথ রয়েছে। ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ৯৮ শতাংশ ঋণখেলাপি ইউনিয়ন ব্যাংকের। পর্যায়ক্রমে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামীর ৯৭ শতাংশ, গ্লোবাল ইসলামীর ৯৫ শতাংশ, সোশ্যাল ইসলামীর ৬২ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং এক্সিম ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৪৮ দশমিক ২০ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আমানতকারীর সুরক্ষা এসব ব্যাংক একীভূতকরণের মূল লক্ষ্য। প্রথম ধাপে আমানত সুরক্ষা তহবিল থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ফেরত দেওয়া হবে। কারো দুই লাখ টাকা জমা থাকলে তিনি পুরো অর্থ তুলতে পারবেন। এর বেশি থাকলেও পুরো অর্থ পাবেন। তবে প্রথম ধাপে সুরক্ষা তহবিল থেকে দুই লাখ টাকা দেওয়া হবে। বাকি টাকা ব্যাংকের নিজস্ব তহবিল থেকে পরিশোধ করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :
More News Of This Category

ফেসবুকে আমরা