মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৩৩ অপরাহ্ন

এনসিপিসহ ৫ দলের নতুন জোট, থাকতে পারে গণঅধিকারও

নিজস্ব প্রতিবেদক / ২৬ Time View
Update : বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৫

এনসিপি, এবি পার্টি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনসহ পাঁচ দল মিলে নতুন নির্বাচনী জোট গঠন করতে পারে। এতে থাকতে পারে বিএনপির মিত্র গণঅধিকার পরিষদও। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নতুন জোট আত্মপ্রকাশ করতে পারে।

সম্ভাব্য এই জোটে আপ বাংলাদেশও থাকতে পারে। এনসিপি গঠনের সময় জাতীয় নাগরিক কমিটি থেকে বেরিয়ে যাওয়া ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতাদের সংগঠন আপ বাংলাদেশ। নতুন জোটের উদ্যোক্তারা সমকালকে জানিয়েছেন, চার দল নিশ্চিত হলেও গণঅধিকার পরিষদ নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। দলটির একাংশ বিএনপির সঙ্গে থাকতে চায়।

২০২২ সাল থেকে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে রয়েছে নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন গণঅধিকার পরিষদ। দলটির সূত্রের ভাষ্য, আসন্ন নির্বাচনে বিএনপির কাছে অন্তত চারটি আসন চাওয়া হয়েছে। তবে বিএনপি এখন পর্যন্ত দুটি নিশ্চিত করেছে। পটুয়াখালী-৩ আসনে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের জোটের মনোনয়ন পাওয়া প্রায় নিশ্চিত। কিন্তু বিএনপি নেতা হাসান মামুনও প্রার্থী হতে চান। তাঁর সমর্থকদের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন নুরুল হকের নুরের সমর্থকরা। মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন হাসান মামুন।

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানকে ঝিনাইদহ-২ আসন ছাড়তে যাচ্ছে বিএনপি। সেখানে বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। গণঅধিকার সূত্র জানিয়েছে, এ কারণে রাশেদ বিএনপির জোট ছাড়তে রাজি নন। এ কারণেই নতুন জোটে যোগ দেওয়ার বিষয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।

রাশেদ খান সমকালকে বলেন, গণঅধিকার ও এনসিপির একীভূত হওয়ার আলোচনা আগেই ভেস্তে গেছে। এখন জোট গঠনের আলোচনা চলছে। জোট হবেই, তা বলা যাচ্ছে না। গণঅধিকার ২০২২ সাল থেকে বিএনপির সঙ্গে রয়েছে। আর এনসিপির নেতৃত্বে জোট হবে না। যৌথ নেতৃত্বে কিছু করা যায় কিনা, আলোচনা চলছে।

গণঅধিকার পরিষদের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন সমকালকে বলেন, জোটের আলোচনা ইতিবাচক পথে এগোচ্ছে। বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর বাইরে তৃতীয় একটি বৃহত্তর জোটের আলাপ চলছে। আগামী বৃহস্পতিবারই জোট আত্মপ্রকাশ করবে– এমন সিদ্ধান্ত হয়নি।

রোববার বিএনপির মিত্র জোট গণতন্ত্র মঞ্চ থেকে বেরিয়ে গেছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। এ দলটি নতুন জোটে থাকবে, তা নিশ্চিত। কী কারণে রাষ্ট্র সংস্কার গণতন্ত্র মঞ্চ ছেড়েছে, তা না জানালেও রাজনৈতিক সূত্রের খবর, আসন বণ্টন নিয়ে টানাপোড়েনেই এ সিদ্ধান্ত।

রাষ্ট্র সংস্কারের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদারুল ভূঁইয়া সমকালকে বলেছেন, বিএনপি বা জামায়াত জোটের বাইরে নতুন জোট করতে চাই। এই মুহূর্তে যে রাজনীতি করা প্রয়োজন, তা এই দুই জোট করছে না। আগামী বৃহস্পতিবার নতুন জোটের আত্মপ্রকাশ হতে পারে– এমন গুঞ্জনের বিষয়ে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু সমকালকে বলেন, দিনক্ষণ ঠিক হয়নি। চারটি দলের থাকা নিশ্চিত। আরও একটি দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

জোটের সম্ভাব্য শরিক দলগুলোর সূত্র জানিয়েছে, এই জোট হবে নির্বাচনী, আদর্শিক নয়। এই জোট বিএনপির জোট বা জামায়াতসহ আট দলের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা করতে পারে। তবে আপাতত একাই থাকবে। জোট বা নির্বাচনী সমঝোতার সিদ্ধান্ত হবে তপশিলের পর। নতুন জোট সংস্কারের জন্য অর্থাৎ গণভোটে হ্যাঁ-এর পক্ষে থাকবে।

জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন এবং গণঅধিকার পরিষদ মিলে ২০২২ সালে গণতন্ত্র মঞ্চ গঠন করা হয়। সাতদলীয় এ জোট বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের মিত্র। বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচি প্রণয়নেও যুক্ত ছিল গণতন্ত্র মঞ্চ। নুরুল হক নুরের গণঅধিকার ২০২৩ সালের মে মাসে গণতন্ত্র মঞ্চ ছাড়ে।

গণতন্ত্র মঞ্চের শরিকদের চার থেকে পাঁচটি আসন ছাড়তে রাজি হয়েছে বিএনপি। জেএসডি, নাগরিক ঐক্য এবং গণসংহতি আন্দোলনকে আসন ছাড়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাকিরা এ আশ্বাস পায়নি।


আপনার মতামত লিখুন :
More News Of This Category

ফেসবুকে আমরা